NAME
Ram thakur
Ram thakur

ঠাকুরের ব্যক্তিগত জীবনযাপন, আচার-আচরণাদির বৈশিষ্ট্য

Ramthakur

শ্রীঠাকুরের আশীর্বাদ ছাড়া ভগবানের অবতার শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্রদেব সম্পর্কে কোনো কিছু বলা বা লেখা আদৌ সম্ভব নয় কারও পক্ষেই। আত্মপ্রচার তিনি অপচ্ছন্দ করতেন - এতটাই যে, কোনও বিশেষ মুহূর্তেও যদি সাধারণ মানুষজনের কাছে ঘটনাক্রমে তাঁর দিব্যশক্তি প্রকাশিত হয়ে পড়ত, ব্যাপারটাকে লঘু করার জন্য তিনি বলতেনঃ 'এরকম তো হয়ই'।

একবার তাঁর মূল্যবান উপদেশ দেবার পর ঠাকুর বলেছিলেনঃ 'আমার ধৃষ্টতা মার্জনা করিবেন। আমি উপদেষ্টা নই, আমি দৃষ্টান্তমাত্র'। সত্যি তিনি ছিলেন জীবন্ত দৃষ্টান্ত। কেমন ছিল তাঁর সেই ভাগ্যবান ভক্তকুলের অভিজ্ঞতা যাঁরা তাঁর খুব কাছাকাছি আসার সুযোগ পেয়েছিলেন? তিনি ছিলেন বিপুল মহাকাশের মতোই বিশাল, উদার, গভীর, দরাজ, স্থির ও শান্ত - যাঁকে টলাতে পারত না কোনও ঝড়ঝাপটা, উত্তেজনা, দুর্ঘটনা, অপযশ, আনন্দ বা দুঃখ। কোনও ঋতুর কোনও প্রভাব তাঁর উপর পড়ত না। অসীম অনন্ত মহাকাশের মতোই তিনি সমস্ত মানুষের মধ্যেই সমানভাবে বিতরণ করতেন তাঁর স্নেহ-ভালোবাসা, তাদের সম্পদ-সমৃদ্ধি, বিদ্যাবুদ্ধি, জ্ঞান, পাপ ও পূণ্যের কোনও বিচার না করেই। এমন কী তাঁকে যারা বিবিধ অপ্রয়োজনীয় অর্থহীন সব প্রশ্ন করত, বিন্দুমাত্র বিরক্ত না হয়ে পরম ধৈর্যের সঙ্গে তিনি তাদের অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করতেন।

অপরিসীম আধ্যাত্মিক শক্তির মূর্ত প্রতীক শ্রীশ্রীঠাকুর সর্বদা পরম বিনয়ী বিনম্র থেকে চেষ্টা করে গেছেন সাধারণ মানুষের হিতসাধন করতে। নিজের সুখস্বাচ্ছন্দ্য সম্বন্ধে চিরকাল উদাসীন থাকলেও, কোথাও তাঁহার সহযাত্রী ভক্তদের প্রতি সামান্যতম অনাদরও তিনি সহ্য করতেন না এবং সেই জাতীয় পরিস্থিতিতে সেই স্থান ত্যাগ Ramthakurকরে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে তাঁকে বিরত করা একরকম দুঃসাধ্য হয়ে উঠত। কাউকে ডাকার সময় তিনি সবসময়ই 'আপনি' বলে সম্বোধন করতেন - এমনই ছিল তাঁর ভদ্রতা ও সৌজন্যবোধ। তাঁর কোনো শিষ্য বা অনুগামী ভক্তের কাছে বা যেখানে হোক, যে-কোনো গৃহে অবস্থানকালে তিনি সেই গৃহের সকলের সঙ্গেই পরমাত্মীয়ের মতো মেলামেশা করতেন; এমন কী কোনও সংস্কার বা কোনও অহংবোধ ছিল না বলে কায়িক শ্রমদান করতেও ইতস্তত করতেন না। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ। তা ছাড়া কোনও রকম আতিশয্য তিনি পছন্দ করতেন না। কী পোষাক পরিচ্ছেদে, কী আহার-বিহারে- একান্ত সরল জীবনযাপন করতেই তিনি ভালোবাসতেন। পোষাকের জন্য আটপৌরে একটা 'ধুতি' আর সাধারণ একটা 'চাদর'; আর দৈনিক আহার বলতে নামমাত্র একটু দুধ বা শুকনো ফল বা সিদ্ধ কিছু সব্‌জি - সেটাই ছিল যথেষ্ট।

তিনি ছিলেন পরিশ্রমী, স্ব-নির্ভর। নিয়মানুবর্তিতা ও কর্তব্যপরায়ণতা ছিল জীবনযাত্রার উপকরণ। অকারণে একটা কথা বলা বা অকারণে কোথাও যাওয়া ছিল তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ। নির্দ্ধিধায় বলা যেতে পারে যে, আমরা যদি তাঁর বাণীসমূহ - অনুধাবন করে চলতে পারি, আমাদের এই মরজগৎ নিশ্চিতভাবেই উপকৃত হবে।

খুবই সহজ সরল উপদেশ দিয়ে তিনি তাঁর অনুগামী ভক্তদের দেখিয়ে দিতেন জ্ঞান ও আলোর পথ; যেমন, যেখানে থাকুন নাম স্মরণ করবেন। আত্মবিশ্বাস থেকে আপন কর্তব্য পালন করবেন। তাতেই কাজ হবে, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ও তাঁর নাম অবিচ্ছেদ্দ্য, অভিন্ন ও এক। এমনকি, শুধু নাম স্মরণ করেই পূর্বনির্ধারিত ভবিতব্যকে অতিক্রম করা যায়। সমারোহ ও আড়ম্বর কখনই বাঞ্ছনীয় নয়; কারণ তাঁতে সত্য অস্পষ্ট হয়ে যায়। তাঁর মধুর, মনোরম উপদেশাবলী ভক্ত হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত হয়ে থাকে।

Best viewed in Firefox / Google Chrome / IE 9.0 or higher
© Shri Shri Kaibalyadham Jadavpur, West Bengal India, 2013.
Website Design By: DRS Tech